
মুরাদনগরে ইউপি সদস্য নুর মুহাম্মদের আধিপত্যের এখনো অবসান হয়নি। ফ্যাসিবাদের পতন হলেও রাজনৈতিক মহল প্রশাসনসহ বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে আঁতাত করে অপরাধ জগতের নিয়ন্ত্রণ ধরে রেখেছেন ওই ইউপি সদস্য।
অভিযোগ রয়েছে, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ক্ষমতার প্রভাবে এলাকায় অপহরণ, চাঁদাবাজি, খাস জমি দখল, শালিস দরবার, সাধারণ কৃষকদের জমি দখল করে মাটি লুট, অবৈধ মৎস্য প্রকল্প, জায়গা দখল করে ভবন নির্মাণ, প্রবাসীদের চাঁদার জন্য হয়রানিসহ নানা অপকর্ম করে আসছেন তিনি। ফ্যাসিবাদের পতনের পরও নূর মুহাম্মদের দৌরাত্ম্যের ইতি ঘটেনি।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, মুরাদনগর উপজেলার ছালিয়াকান্দি ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের সদস্য নুর মুহাম্মদ। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে এমপি এবং নেতাদের ছত্রছায়ায় এলাকায় প্রতিষ্ঠা করেন আধিপত্যের নেটওয়ার্ক। গড়ে তোলেন নিজস্ব ক্যাডার বাহিনী। ইউপি সদস্য হলেও তার প্রভাবের কাছে চেয়ারম্যান কিংবা তার চেয়ে ওপর মহলের দায়িত্বশীলরাও অসহায়।
স্থানীয়রা জানায়, এক সময় নুর মুহাম্মদের নুন আনতে পান্তা ফুরাতো সে এখন বিশাল অর্থ সম্পদের মালিক। তার এসব অপকর্ম নিয়ে থানা এবং আদালতে ১১টি মামলা রয়েছে। ইতিপূর্বে এসব মামলায় তিনি কারাভোগও করেছে।
ভুক্তভোগী পলাশী বেগম বলেন, চাঁদার জন্য আমার স্বামীকে অপহরণ করেন ইউপি সদস্য নুর মুহাম্মদের নেতৃত্বে তার ক্যাডার বাহিনী। পরে তিতাস উপজেলা থেকে পুলিশ আমার স্বামীকে উদ্ধার করে। এ ঘটনা আমি মামলা করেছি। ওই মামলায় সে কারাভোগ করেছে। এখনো মামলাটি চলমান রয়েছে। সে চাঁদার জন্য এলাকায় নিরীহ মানুষকে প্রায়ই অপহরণ এবং নির্যাতন করছে।
এলাকার প্রবাসী জামাল ভূঁইয়া জানান, নুর মুহাম্মদ আমার ১৫ শতাংশ জায়গা জোরপূর্বক দখল করে রেখেছে। আমি মামলা করলেও কোনো প্রতিকার পাচ্ছি না। আওয়ামী লীগের আমলে সে যেমন প্রভাব দেখাইছে এখনও তার প্রভাব দখল চাঁদাবাজি অব্যাহত রয়েছে। তার খুঁটির জোর কোথায় আমরা জানি না।
এলাকার আলম মিয়া বলেন, আমার ৩৩ শতাংশ কৃষি জমি দখল করে জোরপূর্বক জমির টপ সয়েল কেটে নিয়ে গেছে। এলাকার হাসনা বেগম অভিযোগ করে বলেন, আমার জায়গা জোরপূর্বক দখল করে সে এলপিজি স্টেশন নির্মাণ করেছে। তার বিরুদ্ধে মামলা করেও বেকায়দায় আছি। প্রতিনিয়তই হুমকি ধামকি দিয়ে যাচ্ছে। তাছাড়া নুর মুহাম্মদ মৎস্য প্রকল্পে এলাকার জামাল ভূঁইয়ার ১৫ শতক, শাহিন ভূঁইয়ার ১৫ শতক, মৃত মোবারক ভূঁইয়ার ১৪ শতক, মোহাম্মদ বিল্লাল মিয়ার ১৫ শতক, মোহাম্মদ কাবিল ভূইয়ার ২০ শতাংশ দখল করে রেখেছে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত নুর মুহাম্মদ বলেন, মৎস্য প্রকল্পের এসব জায়গা আমি ক্রয় করেছি। কিন্তু এসব জায়গার দলিল নেইনি। আমার বিরুদ্ধে ১১টা নয়, ২টি মামলা চলমান রয়েছে। আপনি আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগগুলো তদন্ত করে দেখেন। আমি দোষী সাব্যস্ত হলে যা শাস্তি দেবেন আমি মাথা পেতে নেব। জমি সংক্রান্ত বিরোধ নিয়ে কিছু লোক আমার পেছনে লাগছে।